শোষণ ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সিপিবি’র সম্মেলন অনুষ্ঠিত


বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সমাজ বদলের লক্ষ্যে শোষণ -বৈষম্যবিরোধী বাম গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে দুর্নীতি মুক্ত, বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে মানুষের অধিকার, মর্যাদা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
দিনাজপুরে দ্বাদশ জেলা সম্মেলনে সিপিবি’র নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কথা বলেন।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল ১১ টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাব চত্বরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য প্রধান অতিথি কমরেড ডা.দিবালোক সিংহ।
প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেন, শত শত ছাত্র -শ্রমিক -জনতার রক্তের উপর দাঁড়িয়ে যে ‘২৪ এর গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে,তা রক্ষা করা এ সরকারের ম্যান্ডেট।
মব সন্ত্রাসের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা যে কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারী সরকারের অবসান ঘটিয়েছি তা নতুন করে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য নয়।
সরকার চাইলেই কেউ মবসন্ত্রাস (উশৃংখল জনতার সংঘবদ্ধ আক্রমণ) করতে পারে না।’২৪ এর জন- আকাঙ্ক্ষা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। শাসক আর শোষকের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। সংস্কার করতে হলে আগে শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করতে হবে, মানুষের স্বাধীনভাবে চলাফেরায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, মজুদদারি ও দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে মুনাফালোভী ধনিক শ্রেণির সকল সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।
দিনাজপুর নাট্য সমিতিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও দিনাজপুর জেলা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি মোহাম্মদ আলতাফ হোসাইন বলেন, সরকারকে বাণিজ্য চুক্তির নামে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে গোপন চুক্তি, রাখাইন করিডোর দেওয়া, বিদেশীদের বন্দর দেওয়াসহ জনস্বার্থ বিরোধী সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে হবে।
সরকারকে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে মানুষকে নির্বাচনমুখী করতে হবে উল্লেখ করে সভাপতির বক্তব্যে জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাড. মেহেরুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিজম নয় মুক্তিযুদ্ধের ধারায় বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য তিনি মেহনতি মানুষ ও তরুণ সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিপিপি’র প্ল্যাটফর্মে আসার আহ্বান জানান।
কমরেড এস এম নুরুজ্জামান ও প্রমেথোস শীলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, জেলা সম্পাদক মন্ডলী সদস্য কমরেড শ্রীদাম দাস, উদীচি’র সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল জলিল, সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম, দিনাজপুর নাট্য সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.রেজাউর রহমান রেজু, খেলাঘর কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্য নুরুল মতিন সৈকত প্রমূখ।
কাউন্সিলে জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মেহেরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান সিদ্দিকী ও সহ-সম্পাদক এসএম নুরুজ্জামান এর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
উদ্বোধনী পর্ব শেষে, দিনাজপুর প্রেসক্লাব থেকে লাল পতাকা হাতে নিয়ে শোষণ -বৈষম্য বিরোধী স্লোগানে স্লোগানে একটি বর্ণাঢ্য মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নাট্য সমিতির সমাবেশ স্থলে এসে শেষ হয়।
মধ্যাহ্নবিরতির পরে দ্বিতীয় অধিবেশনে সাংগঠনিক কার্যক্রম ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।