দিনাজপুরে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
তামাক জনস্বাস্থ্য পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য হুমকি
বিশ্ব তামাক নিয়ন্ত্রন কার্যক্রমকে জোরালো করতে ১৯৮৭ সালের বিশ্বস্বাস্থ্য সম্মেলনে বছরের একটিদিন বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস হিসেবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রথম বছর ১৯৮৮ সালের ৭ এপ্রিল বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস উদযাপিত হলেও একই বছরের বিশ্বস্বাস্থ্য সম্মেলনে ৩১ মে
তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ১৯৮৯ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস উদযাপিত হয়ে আসছে। তামাক উৎপাদন ও ব্যবহারে ব্যাপক প্রাদুভার্ব জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনীতির জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে জনসচেতনতা বাড়াতে অন্য
দেশের মতো বাংলাদেশেও ৩১ মে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস পালন করা হয়।এবারের প্রতিপাদ্য ‘তামাক কোম্পানীর হস্তক্ষেপ প্রতিহত করি, শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করি।’ এই স্লোগানকে ধারণ করে সারাদেশের ন্যায় দিনাজপুরে জেলাপ্রশাসন ও ফুলবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রতিপাদ্য বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদের সভাপতিত্বে কাঞ্চন—১ এ এক মনোজ্ঞ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার ৩১ মে ফুলবাড়ী উপজেলা চত্তর থেকে এক বর্ণিল র্যালি শেষে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে সিনিয়র সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও
নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও উপজেলা স্যানিটারী ইসপেক্টর জগদীশ চন্দ্র মহন্তের সঞ্চালনায় বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদান করেন জেলা ক্যাব, তামাক নিয়ন্ত্রন টাস্কফোর্স কমিটির নির্বাহী সদস্য ও উপজেলা ক্যাবের সভাপতি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাসউদ রানা, শিল্পকলার সংগীত প্রশিক্ষক মো. খালিদ হোসেন বকুল, উপজেলা প্রশাসনের উপ—প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান,
ফুলবাড়ী রিপোটার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আল হেলাল চৌধুরী, ফুলবাড়ী সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী ইফতেখারুল ইসলাম, দিনাজপুর জেলার বঙ্গবন্ধু পেশাজীবীলীগের তথ্য -গবেষণা সম্পাদক মো. আশরাফুল আলম,উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্থ্যাস্থ্য সহকারী মো. মোস্তাক আহমেদ প্রমুখ।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, মানুষের জীবন একটাই, একবার চলে গেলে আর ফিরে আসবে না। এখনই সময় জীবন বাঁচাবার। আগামীদিনের মানবসম্পদ আমাদের শিশুদের সুরক্ষার জন্য তামাক কোম্পানীর হস্তক্ষেপ প্রতিহত করতে হবে। ফিরে আনতে হবে তরুণ প্রজন্মকে। শিক্ষকদের
পাশাপাশি সামাজিক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দকে কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। একই সঙ্গে জনপ্রিয় ক্রিকেটার ও তারকাদেরও তামাক ও মাদকাবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে হবে।
তারা যেন এ আন্দোলনে ডিজিটাল প্রযুক্তি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো ব্যবহার করেন। সে সঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রন আইন শক্তিশালী ও কার্যকরী করতে হবে। কারণ ধুমপানে পরোক্ষ ধোয়ার প্রভাবে প্রায় ৬ লক্ষ অধুমপায়ী ক্ষতির শিকার হচ্ছে। খুব কমই তামাকের
মতো অন্য কোনো একক পণ্য প্রতি বছর ৮ মিলিয়নের বেশি লোককে মারার দাবি করতে পারে এবং বার্ষিক ৮০ মিলিয়ন টন কার্বনডাই অক্সাইড নির্গমন করে এবং বিশ্বের সবচেয়ে আবর্জনাযুক্ত বস্তু তৈরি করে। দূষিত হচ্ছে জলবায়ু ও পরিবেশ। সিগারেটের ফিল্টারে মাটির উর্বরতা হারাচ্ছে। নষ্ট
হচ্ছে মাছসহ জলজপ্রাণী। তাই প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আসুন পৃথিবীকে নিরাপদ ও বাসযোগ্য করি।