ঢাকা ০৩:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
রাজবাড়ীতে অভিমান করে তরুণীর আত্মহত্যা লোহাগড়া বাজারে সরকারি সড়ক দখল করে তিনতলা ভবন নির্মাণ, চরম দুর্ভোগে পথচারীরা হতদরিদ্র শাহিনুর বেগমকে ঘর উপহার দিলেন- দেশ নায়ক তারেক রহমান একাত্তরের অমীমাংসিত বিষয়ে দুইবার সমাধান হয়েছে দাবি করেছেন -ইসহাক দার জনগণের ইচ্ছাতেই দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি, কোন ইচ্ছা নেই সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে প্রবেশের -প্রধান উপদেষ্টা  কালুখালীতে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ২২ কোনো ষড়যন্ত্রেই কাজে আসবেনা যদি জনগন নির্বাচনমূখী হয়- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাজবাড়ী পাংশাতে “Digital Skills Training for Students” কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠান পাঁচশত কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে পলাতক পুষ্পধারার পরিচালক মাইনউদ্দিন র‍্যাব ৭ একটি আভিযানিক দলের অভিযানে পৃথক তিন মামলার ৩ আসামি প্রেফতার

নড়াইলের লোহাগড়ায় অতিবৃষ্টিতে সোনালী মৎস্য খামারের ব্যাপক ক্ষতি

আব্দুল্লাহ আল মামুন:

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় সোনালী মৎস্য খামার এন্ড নার্সারিতে টানা তিনদিনের বৃষ্টির ফলে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে। খামারটির মালিক মহাসিন মোল্লা জানিয়েছেন, আকস্মিক বৃষ্টি ও পানির প্রবল চাপের কারণে তার মৎস্য খামারে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, “এ বছর প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এতে আমার ব্যবসার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে এবং ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া কঠিন হবে।”

সোনালী মৎস্য খামারটি মূলত একটি মাছের নার্সারি হিসেবে পরিচিত, যেখানে ছোট মাছের রেণু থেকে পূর্ণবয়স্ক মাছ তৈরি করা হয়। মহাসিন মোল্লার এই মাছের নার্সারি ছাড়াও কামঠানা ও নড়াইল লোহাগড়ার বিভিন্ন এলাকায় তার আরও কয়েকটি মৎস্য খামার রয়েছে। তিনি জানান, “আমার মৎস্য খামারগুলোতে বাচ্চা মাছ থেকে পূর্ণবয়স্ক মাছ তৈরি করে বাজারজাত করি। কিন্তু এবারের অতিবৃষ্টিতে প্রচুর মাছ ভেসে গেছে।বৃষ্টির কারণে খামারের পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারের পাড় ভেঙে পড়ে, যার ফলে খামারের অধিকাংশ মাছ ভেসে যায়। মহাসিন মোল্লা বলেন, “এটি আমার ব্যবসার জন্য বড় আঘাত। মাছের রেণু ও ছোট মাছের ক্ষতি হওয়ায় ভবিষ্যতে উৎপাদন ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

এছাড়াও লোহাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি রতন শেখ ও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি বলেন, “আমারও একটি মৎস্য খামার আছে এবং বৃষ্টির কারণে আমার খামারেও কিছু মাছ ভেসে গেছে। তবে মহাসিন মোল্লার খামার থেকে যেভাবে মাছ বেরিয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিশেষ করে কামঠানাতে তার খামারের পশ্চিম দিকের অংশটি পানির চাপ সহ্য করতে না পেরে ভেঙে গেছে।”

খামারটির মূল মালিক হাজী মোহাম্মদ মোফাজ্জল মোল্লাও ব্যাপক ক্ষতির কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন,আমি খামার টি ভাড়া দিয়েছি সোনালী মৎস্য খামারকে “হঠাৎ বৃষ্টির কারণে খামারের বাঁধ ভেঙে যায়, যার ফলে প্রচুর মাছ ভেসে গেছে। এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে আমাদের এলাকার মৎস্য খামারিরা প্রচণ্ড আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।”

মহাসিন মোল্লা ও রতন শেখ উভয়েই সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন। তারা বলছেন, এমন ক্ষতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সরকারি সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। মহাসিন মোল্লা বলেন, “ক্ষতিপূরণ না পেলে ব্যবসা পুনরায় গড়ে তোলা আমার জন্য অসম্ভব হয়ে পড়বে। এছাড়া আমাদের খামার থেকে উৎপাদিত মাছের পরিমাণও কমে যাবে, যা স্থানীয় বাজারে মাছের সংকট তৈরি করতে পারে।”

এদিকে, কামঠানা এলাকায় অন্যান্য মৎস্য খামারিরাও এ বছর ক্ষতির শিকার হয়েছেন। তাদেরও একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে, যা থেকে উঠে দাঁড়াতে সময় লাগবে। বৃষ্টিপাতের কারণে নড়াইলের বিভিন্ন মৎস্য খামারের বাঁধ এবং পানির স্তরের নিয়ন্ত্রণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, যা মাছ উৎপাদনের ক্ষতি করেছে।

স্থানীয় মৎস্য খামারিরা এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য প্রস্তুতি নিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা খামারগুলোর পানির প্রবাহ এবং বাঁধের নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন। সরকারের সহযোগিতা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে, এই ধরনের ক্ষতি থেকে পুনরুদ্ধার করা খামারিদের জন্য কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ট্যাগস :
আপডেট সময় ১০:০১:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
১২৩ বার পড়া হয়েছে

নড়াইলের লোহাগড়ায় অতিবৃষ্টিতে সোনালী মৎস্য খামারের ব্যাপক ক্ষতি

আপডেট সময় ১০:০১:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় সোনালী মৎস্য খামার এন্ড নার্সারিতে টানা তিনদিনের বৃষ্টির ফলে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে। খামারটির মালিক মহাসিন মোল্লা জানিয়েছেন, আকস্মিক বৃষ্টি ও পানির প্রবল চাপের কারণে তার মৎস্য খামারে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, “এ বছর প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এতে আমার ব্যবসার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে এবং ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া কঠিন হবে।”

সোনালী মৎস্য খামারটি মূলত একটি মাছের নার্সারি হিসেবে পরিচিত, যেখানে ছোট মাছের রেণু থেকে পূর্ণবয়স্ক মাছ তৈরি করা হয়। মহাসিন মোল্লার এই মাছের নার্সারি ছাড়াও কামঠানা ও নড়াইল লোহাগড়ার বিভিন্ন এলাকায় তার আরও কয়েকটি মৎস্য খামার রয়েছে। তিনি জানান, “আমার মৎস্য খামারগুলোতে বাচ্চা মাছ থেকে পূর্ণবয়স্ক মাছ তৈরি করে বাজারজাত করি। কিন্তু এবারের অতিবৃষ্টিতে প্রচুর মাছ ভেসে গেছে।বৃষ্টির কারণে খামারের পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারের পাড় ভেঙে পড়ে, যার ফলে খামারের অধিকাংশ মাছ ভেসে যায়। মহাসিন মোল্লা বলেন, “এটি আমার ব্যবসার জন্য বড় আঘাত। মাছের রেণু ও ছোট মাছের ক্ষতি হওয়ায় ভবিষ্যতে উৎপাদন ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

এছাড়াও লোহাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি রতন শেখ ও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি বলেন, “আমারও একটি মৎস্য খামার আছে এবং বৃষ্টির কারণে আমার খামারেও কিছু মাছ ভেসে গেছে। তবে মহাসিন মোল্লার খামার থেকে যেভাবে মাছ বেরিয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিশেষ করে কামঠানাতে তার খামারের পশ্চিম দিকের অংশটি পানির চাপ সহ্য করতে না পেরে ভেঙে গেছে।”

খামারটির মূল মালিক হাজী মোহাম্মদ মোফাজ্জল মোল্লাও ব্যাপক ক্ষতির কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন,আমি খামার টি ভাড়া দিয়েছি সোনালী মৎস্য খামারকে “হঠাৎ বৃষ্টির কারণে খামারের বাঁধ ভেঙে যায়, যার ফলে প্রচুর মাছ ভেসে গেছে। এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে আমাদের এলাকার মৎস্য খামারিরা প্রচণ্ড আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।”

মহাসিন মোল্লা ও রতন শেখ উভয়েই সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন। তারা বলছেন, এমন ক্ষতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সরকারি সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। মহাসিন মোল্লা বলেন, “ক্ষতিপূরণ না পেলে ব্যবসা পুনরায় গড়ে তোলা আমার জন্য অসম্ভব হয়ে পড়বে। এছাড়া আমাদের খামার থেকে উৎপাদিত মাছের পরিমাণও কমে যাবে, যা স্থানীয় বাজারে মাছের সংকট তৈরি করতে পারে।”

এদিকে, কামঠানা এলাকায় অন্যান্য মৎস্য খামারিরাও এ বছর ক্ষতির শিকার হয়েছেন। তাদেরও একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে, যা থেকে উঠে দাঁড়াতে সময় লাগবে। বৃষ্টিপাতের কারণে নড়াইলের বিভিন্ন মৎস্য খামারের বাঁধ এবং পানির স্তরের নিয়ন্ত্রণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, যা মাছ উৎপাদনের ক্ষতি করেছে।

স্থানীয় মৎস্য খামারিরা এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য প্রস্তুতি নিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা খামারগুলোর পানির প্রবাহ এবং বাঁধের নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন। সরকারের সহযোগিতা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে, এই ধরনের ক্ষতি থেকে পুনরুদ্ধার করা খামারিদের জন্য কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।