ঢাকা ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ছাত্রদলের আয়োজনে স্কিল কম্পিটিশন ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত লোহাগড়ার ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, দুদকে গণস্বাক্ষরসহ অভিযোগপত্র দাখিল এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রীধারী ছারা নামের আগে ডাক্তার লেখা যাবেনা মিরপুর দারুসসালামে  দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ বাংলাদেশ ও ভারতীয় অংশগ্রহণে যৌথ মহড়া। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে ধর্ষণের বিচার ৩০ দিনের মধ্যে শেষ করার দাবি শিক্ষার্থীদের টেকনাফ ও হাতিয়ায় নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র ও  গুলিসহ ৭জন আটক। ঢাকাস্থ ফুলবাড়ী সমিতির ইফতার মাহফিল ও নতুন কমিটি ঘোষণা ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র পক্ষ থেকে শের ই বাংলা নগর ও শাহআলী ছাএদলের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল দোয়া  অনুষ্ঠিত মৃত্যুঞ্জয়ী ছাত্রনেতা রবিন খানকে জন্মভূমি টাঙ্গাইলে সংবর্ধনা প্রদান

লোহাগড়ার ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, দুদকে গণস্বাক্ষরসহ অভিযোগপত্র দাখিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) মো. ইউনুছ শেখের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা তার লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে অপসারণ এবং অবৈধ সম্পদের তদন্তের দাবিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)সহ ঢাকা ও খুলনা বিভাগীয় বিভিন্ন দপ্তরে গণস্বাক্ষরকৃত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ভুক্তভোগীরা এই অভিযোগপত্র ডাকযোগে জমা দেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মো.ইউনুছ শেখের গ্রামের বাড়ি উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে। তার পারিবারিক অবস্থা আগে শোচনীয় থাকলেও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা পদে যোগদানের পর থেকেই তার জীবনযাত্রায় নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ গ্রহণ ও সরকারি জমি আত্মসাতের মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, জয়পুর মৌজার এসএ ৫৫০ খতিয়ানের ৩৪০২ ও ৩৪৩২ নং দাগের খাস জমি তিনি অবৈধভাবে নিজের নামে নামজারি করে আরএস রেকর্ড করেছেন। ১৯৯৯ সালের ২৮ জুন M/C কেস নং ১১৯/IX-II/৯৮-৯৯ এর মাধ্যমে নিজের এবং মেয়ের শ্বশুরের নামে এই নামজারি করান। সরকারি জমি আত্মসাৎ করে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানানোর বিষয়টি গুরুতর অপরাধ বলে অভিযোগকারীরা উল্লেখ করেছেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, লোহাগড়া পৌরসভাধীন মৌজার এসএ ২৯৯৩ ও ২৯৯৮ নং দাগে মোট ৩৮.৫০ শতক জমি তিনি নিজের ও স্ত্রী রুখছানা পারভীনের নামে ৩৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেন। তবে রেজিস্ট্রিতে তিনি জমির ক্রয়মূল্য ১০ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা দেখান, যা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রি নং ২৩৭৮/২০০৩ ও ৪৩৮/২০১৭ এর মাধ্যমে তিনি রিজিয়া বেগম ও খান ওহিদুরজ্জামানের কাছ থেকে ৩ শতক জমি নিজের ক্ষমতা বলে জবরদখল করেছে । যাহার আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। মানিকগঞ্জ বাজারের শামুকখোলা মৌজার আরএস ৮৬৯ দাগে মানিকগঞ্জ বাজারের দোকান ভাড়া দিয়েছেন। এছাড়া লোহাগড়া বাজারে বটতলায় তিনি তার জামাইয়ের নামে ৪৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে “ইমরান সু” ও “এডিটাচ সু” নামে দুটি দোকান ক্রয় করেছেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মো. ইউনুছ শেখ বর্তমানে নিজের নামে ৫ তলা বিশিষ্ট বিলাসবহুল ভবন নির্মাণ করছেন, যার আনুমানিক ব্যয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। তার নামে ও বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে, যা তদন্ত করলে আরও অবৈধ সম্পদের সন্ধান মিলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা মো. ইউনুছ শেখের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দুর্নীতির তদন্ত করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। এছাড়া, মো. ইউনুছ শেখকে ভূমি অফিস থেকে দ্রুত অপসারণের দাবিও জানিয়েছে ভুক্তভোগী মহল।

এ বিষয়টি জানতে, নায়েব ইউনুছের লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি।

অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে দুদক বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত শুরু করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্যাগস :
আপডেট সময় ১১:৫৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
৩ বার পড়া হয়েছে

লোহাগড়ার ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, দুদকে গণস্বাক্ষরসহ অভিযোগপত্র দাখিল

আপডেট সময় ১১:৫৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) মো. ইউনুছ শেখের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা তার লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে অপসারণ এবং অবৈধ সম্পদের তদন্তের দাবিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)সহ ঢাকা ও খুলনা বিভাগীয় বিভিন্ন দপ্তরে গণস্বাক্ষরকৃত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ভুক্তভোগীরা এই অভিযোগপত্র ডাকযোগে জমা দেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মো.ইউনুছ শেখের গ্রামের বাড়ি উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে। তার পারিবারিক অবস্থা আগে শোচনীয় থাকলেও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা পদে যোগদানের পর থেকেই তার জীবনযাত্রায় নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ গ্রহণ ও সরকারি জমি আত্মসাতের মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, জয়পুর মৌজার এসএ ৫৫০ খতিয়ানের ৩৪০২ ও ৩৪৩২ নং দাগের খাস জমি তিনি অবৈধভাবে নিজের নামে নামজারি করে আরএস রেকর্ড করেছেন। ১৯৯৯ সালের ২৮ জুন M/C কেস নং ১১৯/IX-II/৯৮-৯৯ এর মাধ্যমে নিজের এবং মেয়ের শ্বশুরের নামে এই নামজারি করান। সরকারি জমি আত্মসাৎ করে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানানোর বিষয়টি গুরুতর অপরাধ বলে অভিযোগকারীরা উল্লেখ করেছেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, লোহাগড়া পৌরসভাধীন মৌজার এসএ ২৯৯৩ ও ২৯৯৮ নং দাগে মোট ৩৮.৫০ শতক জমি তিনি নিজের ও স্ত্রী রুখছানা পারভীনের নামে ৩৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেন। তবে রেজিস্ট্রিতে তিনি জমির ক্রয়মূল্য ১০ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা দেখান, যা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রি নং ২৩৭৮/২০০৩ ও ৪৩৮/২০১৭ এর মাধ্যমে তিনি রিজিয়া বেগম ও খান ওহিদুরজ্জামানের কাছ থেকে ৩ শতক জমি নিজের ক্ষমতা বলে জবরদখল করেছে । যাহার আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। মানিকগঞ্জ বাজারের শামুকখোলা মৌজার আরএস ৮৬৯ দাগে মানিকগঞ্জ বাজারের দোকান ভাড়া দিয়েছেন। এছাড়া লোহাগড়া বাজারে বটতলায় তিনি তার জামাইয়ের নামে ৪৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে “ইমরান সু” ও “এডিটাচ সু” নামে দুটি দোকান ক্রয় করেছেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মো. ইউনুছ শেখ বর্তমানে নিজের নামে ৫ তলা বিশিষ্ট বিলাসবহুল ভবন নির্মাণ করছেন, যার আনুমানিক ব্যয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। তার নামে ও বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে, যা তদন্ত করলে আরও অবৈধ সম্পদের সন্ধান মিলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা মো. ইউনুছ শেখের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দুর্নীতির তদন্ত করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। এছাড়া, মো. ইউনুছ শেখকে ভূমি অফিস থেকে দ্রুত অপসারণের দাবিও জানিয়েছে ভুক্তভোগী মহল।

এ বিষয়টি জানতে, নায়েব ইউনুছের লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি।

অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে দুদক বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত শুরু করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।