মানিকগঞ্জে অবস্হান করেও রাজশাহীতে মামলার আসামী
মানিকগঞ্জ থেকে রাজশাহীর বাঘাতে গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতের মামলার আসামি দিনমজুর।
স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩০০ কিঃমিঃ দুরে থেকেও গৃহবধুকে ছুরিকাঘাতের মামলার আসামি হয়েছেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দিন মজুর হিমেল মোল্লা (৩০) নামের এক যুবক। সে উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের হেলাল মোল্লার ছেলে। গত ৮ মে (বুধবার) একই গ্রামের শাহিন ইসলামের স্ত্রীর দায়েরকৃত মামলায় হিমেল কে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়,উপজেলার পাকুরিয়া ইউপির কেশবপুর গ্রামের শিমুল ইসলামের স্ত্রীকে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত (বুধবার ৮ মে) তিনটার দিকে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাই একই গ্রামের হুরমতের ছেলে রবিউল ইসলাম রবি(২৫) ( এজাহারে বর্ণিত এক নাম্বার আসামি) ও ওই গ্রামের হেলাল মোল্লার ছেলে হিমেল মোল্লা (এজাহারে বর্ণিত ২ নাম্বার আসামি)।
তাৎক্ষণিক প্রতিবেশীরা ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে আহত ওই গৃহবধূ থানায় উপস্থিত হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০,
সংশোধনী-২০০৩/১০ ও পেনাল কোড (৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩৮০/৪৫৭ ও ৫০৬) ধারায় মামলা রুজু করেন। মামলা নাম্বার ১৩, তারিক ৮ মে-২০২৪।
তবে মামলার দুই নাম্বার আসামি হিমেলের পরিবার ও শতাধিক এলাকাবাসীর দাবি, হিমেল দিনমজুরের কাজ করে। সে গত ৭ মে( মঙ্গলবার) সকাল নয়’টায় মানিকগঞ্জে ধান কাটার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন এবং ওই দিন সন্ধ্যা সাতটায় মানিকগঞ্জে স্বপন হোসেনের বাড়িতে ভাড়া উঠে। এ সময় হিমেলের সঙ্গে আরও ছিলেন এবং অদ্যাবধি আছেন, একই এলাকার (কেশবপুর-বাঘা) আমিরুল সরকারের ছেলে জব্বার, জিয়ারুলের ছেলে মেহেদী, কামরুলের ছেলে মিনারুলসহ আরও অনেকে।
এ প্রসঙ্গে হিমেল এর পিতা দিন মজুর হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা গরিব মানুষ। মানুষের জমিতে কামলা দিয়ে জীবন যাপন করি। আমার ছেলে হিমেল ধান কাটার কাজে মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় মানিকগঞ্জে চলে গেছে।
তারপরেও মিথ্যা ও হয়রানিমূলকভাবে আমার ছেলেকে আসামি করা হয়েছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রতি আকুল আবেদন জানাতে চাই, এমন মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলার আসামি থেকে আমার ছেলেকে মুক্তি দেয়া হোক।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী গৃহবধূ বলেন, ওই দিন (বুধবার ) রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় আমার ঘরের ভেতরে ঢুকে কেশবপুর গ্রামের হুরমতের ছেলে রবি মুখ চেপে ধরে। এ সময় আমি জেগে উঠলে সে আমার বাম হাতের কনুইসহ বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
হিমেল সেসময় উপস্থিত ছিল কিনা জানতে চাইলে গৃহবধূ বলেন, হিমেল উপস্থিত ছিল না। তবে আমার মনে হয়েছে বাইরে কেউ দাঁড়িয়ে ছিল। রবির সাথে হিমেলের বন্ধুত্ব আছে বিধায় আমার সন্দেহ, হিমেলও রবির সাথে ছিল। আমি পুলিশকে আমার সন্দেহের কথা বলেছি, সরাসরি আসামি করতে বলিনি। এ বিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, বাদির লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। যদি কেউ মিথ্যে আসামী হয়ে থাকে, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।